Get on Google Play

চাকরি প্রর্থীদের সমস্যা, প্রশ্ন, মতামত এবং বিভিন্ন পেশা সর্ম্পকে আলোচনা, অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ
#7421
পড়াশোনার শেষ ধাপে এসে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়েন ক্যারিয়ার নিয়ে । জীবনের প্রথম চাকরি সমগ্র জীবনে বাকি কার্যক্রমের উপরও প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করে । তাই প্রথম চাকরি নির্বাচনের আগে কিছু বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা রাখা প্রয়োজন ।

-প্রথমে সিদ্ধান্ত নিন ঠিক কোন ধরণের চাকরি আপনার জন্য উপযুক্ত হবে । আপনার শার‌ীরিক , মানসিক এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে খাপ খায় এমন চাকরিই তালিকার প্রথমে রাখুন ।

-এমন কিছু কোম্পানির তালিকা তৈরি করুন যাদের হয়ে আপনি কাজ করতে চান । পড়াশোনা শেষ করার বছর খানেক আগে থেকে এসব কোম্পানির পণ্য , লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য , নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেয় শুরু করুন । দীর্ঘদিন এসব বিষয়ের উপর নজর রাখলে নিজের অজান্তেই প্রচুর জ্ঞান অর্জন করে ফেলবেন কোম্পানিরগুলো সম্পর্কে , যা আপনার কাঙ্খিত চাকরি পেতে সাহায্য করবে।

-নতুন গ্রাজুয়েটর সাধারণত প্রথমদিকে নিচু পদমর্যাদার চাকরিই পেয়ে থাকে । পদমর্যাদা নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে ভাবুন , আপনার কাজটি কোম্পানি ঠিক কোন ক্ষেত্রে উন্নতিতে সাহায্য করবে । যেমন কাজেই হো ধৈর্য , অধ্যবসায় এবং নিষ্ঠার সাথে তা সম্পন্ন করুন । এই গুণগুলোই ধীরে ধীরে আপনাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে ।

-চাকরির সাথে কোম্পানি প্রদত্ত আনুষঙ্গিক সুবিধার দিকে লক্ষ্য রাখুন । কিছু প্রতিষ্ঠান বাৎসরিক স-বৈতনিক ছুটি , অসুস্থতাজনিত ছুটি , বাৎসরিক বোনাস , চিকিৎসা বীমা ইত্যাদি সুবিধা প্রদান করে । আবার কিছু কোম্পানি বাসস্থান সুবিধা , নিজস্ব পরিবহণ ব্যবস্থা , ভ্রমণ ভাতা ইত্যাদি প্রদান করে । আপনার চাহিদার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কোম্পানিই এই ক্ষেত্রে নির্বাচন করুন ।

-যে কোম্পানিতে পরবর্তীতে চাকরি করতে চান , ছাত্র থাকা অবস্থাতেই খোঁজ নিন তাদের কোন ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম আছে কি না । এত করে আপনি অনেক আগে থেকেই কাঙ্খিত কোম্পানির পরিবেম , কাজের ধরণ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন ।

অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হচ্ছে , বেশিরভাগ সময় মানুষ আসলে অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না –
যখন কথা বলবো , তখন আমি কিছুই শিখতে পারব না ।
প্রতিদিন সকালে আমি উপলব্ধি করি যে , আজ যদি আমি কোনো কথা না বলি তাহলে অনেক কিছু শিখতে পারব । আজকে অনেক কিছু শিখতে হবে আমাকে । এই শেখার একটাই উপায় আছে । সেটা হলো অন্যজন কি বলছে সেটা মনোযোগ দিয়ে শোনা ।
অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার হচ্ছে , বেশিরভাগ সময় মানুষ আসলে অন্যের কথা শোনে না । প্রতিদিন কারো না কারো সঙ্গে কথা বলতে হয় আপনাকে । একটু খেয়াল করলেই আমার কথার সত্যতা খুঁজে পাবেন । বন্ধু বা পরিবারকে বলুন যে ঠিক ৮টার সময় এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করেছে আপনার প্লেন । কিছুক্ষণ পর হঠাৎ কেউ একজন প্রশ্ন করে বসবে : কি বললে তুমি । ক’টার সময় তোমার প্লেন ল্যান্ড করেছে ?

ইচ্ছে হলে ছোট্ট একটা হিসাব করে দেখতে পারেন আপনি । সারাদিন অনেকের সঙ্গে কথা বলে যান । ‘একটু আগে তুমি কি বললে সেটা ভুলে গেছি আমি ।’-এই ধরনের কথা ক’বার শুনতে হচ্ছে সেটা হিসাব করুন । একসময় আপনার মনে হবে আসলে কেউই কারো কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে না ।
আপনি যদি কারো কথা মনোযোগ দিয়ে না শোনেন , তাহলে আপনার কথাও কেউ মনোযোগ দিয়ে শুনবে না । একটা ছোট্ট শহর কিংবা গ্রাম্য এলাকার রেলস্টেশনের ক্রসিংয়ের পাশে লেখা কথাটা কথা মনে করে দেখুন । কি লেখা থাকে সেখানে । লেখা থাকে : ‘থামো…দেখো…শোনো ।’ যার সঙ্গে কথা বলছেন তাকে বোঝান যে আপনি তার প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন । তাতে আপনি যখন কথা বলবেন , তখন তিনিও মনোাযোগ দেবে আপনার কথায় ।
ভালোভাবে কথা বলার পূর্বশর্ত হচ্ছে ভালো শ্রোতা হওয়া । এর জন্য যে কথা বলছেন , তার প্রতি শুধু মনোযোগ দিলেই হবে না , তার বলা প্রতিটি কথা শুনতে হবে আপনাকে ।
বারবার ওয়াল্টারস সাক্ষাৎকার নেয়ার কাজ করতেন । কিন্তু তার অনুষ্ঠান দেখে প্রায়ই হতাশ হতাম আমি । কারণ সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় বারবারা সব সময় একই ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন । তার বেশিরভাগ প্রশ্ন হয় ‘এমন হলে কী হতো বা কী করতেন ’ – এই ধাঁচের । আমার মতামত হচ্ছে সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় বারবারার একটু কঠিন প্রশ্ন করা উচিত । তাতে যার সাক্ষাৎকার নেয় হচ্ছে , তিনি সংক্ষেপে কোনো উত্তর দিতে পারবেন না । তবে শুধু কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে গেলেই হবে না । সেই সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে তার প্রতিটি কথা ।
কয়েক বছর আগে টাইম ম্যাগাজিনে টেড কপোলের বলা একটা কথা পড়ে কৃতজ্ঞতাবোধ করেছি আমি । তিনি বলেছিলেন , ‘ল্যারি তার শ্রোতাদের প্রতি মনোযোগী । তাদের প্রত্যেকটা কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শোনেন । যারা সাক্ষাৎকার নেয়ার পেশায় আছেন , তাদের মধ্যে গুটিকয়েকজনের মধ্যে এই গুণটা আছে ।’ আরেকটা কথা জানিয়ে রাখি আপনাদের । সবাই আমাকে বাকপটু হিসেবে চিনলেও , আমার এই সাফল্যের আসল রহস্য হচ্ছে একজন ভালো বক্তা হওয়ার আগে আমাকে ভালো একজন শ্রোতা হতে হয়েছে ।
রেডিওতে কারো সাক্ষাৎকার নেয়ার আগে আমি কিছু প্রস্তুতি নিই । তাকে কি কি প্রশ্ন করব সে ব্যাপারে নোট লিখি একটা । কিন্তু মাঝে-মধ্যে এমন কিছু কথা শুনতে হয় , যার ফলে তাদেরকে অবাঞ্চনীয় প্রশ্ন করতে হয় এবং বলাই বাহুল্য এ-সব প্রশ্নের উত্তরও হয় অদ্ভুত । একটা উদাহরণ দেয়া যাক আপনাদের :
১৯৯২ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলার সময় সেই সময়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডন কোয়েলি আমার অতিথি হয়েছিলেন । গর্ভপাত আইনের ব্যাপারে কথা বলছিলাম আমরা । কথা বলা এক পর্যায়ে কোয়েলি বললেন , তার মেয়ে একদিনের জন্য স্কুল মিস দিতে পারে , সে জন্য আমার বা তার মায়ের অনুমতি নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই , কিন্তু সে যদি গর্ভপাতের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় , তাহলে অবশ্যই চাইব নিজের সিদ্ধান্তটা আমাদের জানাবে সে । কোয়েলির কথা শুনে এখনকার রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তার কি দৃষ্টিভঙ্গি সে ব্যাপারে জানার খুব ইচ্ছে হলো আমার । জানতে চাইলাম , তার মেয়ে যদি হঠাৎ করে বলে বসে সে গর্ভপাত করতে চায় , তাহলে আপনি কী করবেন ? আমার প্রশ্নের উত্তরে কোয়েলি বললেন , এক্ষেত্রে মেয়েদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করব আমি ।
কোয়েলির এই উত্তরকে ব্যতিক্রমই বলতে হবে । ১৯৯২ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু ছিল গর্ভপাত । এই নির্বাচনে কোয়েলি হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট বুশের একজন রক্ষণশীল সঙ্গী । মজার ব্যাপার হচ্ছে , বুশ গর্ভপাতের চরম বিরোধী । কিন্তু তার নির্বাচনী সঙ্গী হয়েও কোয়েলি হঠাৎ বলে বসলেন তার মেয়ে যদি কখনো গর্ভপাত ঘটাতে চায় , সেক্ষেত্রে তার পূর্ণ সমর্থন থাকবে ।
কোয়েলিকে তার মনের কথাটা বলাতে পেরেছি আমি । যদি একটার পর একটা প্রশ্ন করে যেতাম , তাহলে কিন্তু কখনোই কোয়েলির এই মনের কথাটা জানতে পারতাম না । আমি একটা করে প্রশ্ন করেছি । তারপর একেবারে চুপ করে গেছি । কোয়েলি যতক্ষণ কথা বলেছেন , কোনোরকম বাধা না দিয়ে শুনে গেছি তার কথা । এই কারণেই তার মনের ভিতরের কথাটা জানতে পেরেছি আমি । কোয়েলির ওই মন্তব্য শুধু কথা নয় , একটা খবরও বটে ।
১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বিশ তারিখে রোজ পিরোট যখন আমার শো’তে অতিথি হয়ে এসেছিলেন , তখন ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল । এক প্রশ্নের উত্তরে পিরোট বললেন , প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই তার । কথাটা তিনি বারবার বলছিলেন । শো’য়ের শেষ পর্যায়ে এসে তাকে একটু অন্যভাবে করলাম প্রশ্নটা । অবাক কাণ্ড ! এবার সম্পূর্ণ বদলে গেলেন রোজ । বলে বসলেন , সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিতে রাজি আছেন তিনি , যদি সমর্থকরা তাকে পঞ্চাশটা রাজ্যে জেতাতে পারে ।
রোজের এই বদল কিন্তু আমার প্রশ্নের ধরনের কারণে হয়নি । হয়েছে শোনার কারণে । অর্থাৎ বাধা না দিয়ে তার কথা শোনার কারণেই এক সময় তার মনের ভিতরের কথাটা জানতে পেরেছি ।
পরলোকগত জিম বিশপকে তো আপনারা অনেকেই চিনবেন । তিনি শুধু একজন জনপ্রিয় লেখকই ছিলেন না , সেই সঙ্গে কলামিস্ট হিসেবেও তার প্রচুর নাম-ডাক ছিল । জীবনের অনেকটা সময় মায়ামিতে কাটিয়েছেন তিনি । সেই সময় আমিও মায়ামিতে ছিলাম । তার কাছ থেকে অদ্ভুত এক কথা জানতে পেরেছি । তার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর অনেক মানুষই জানতে চান কেমন আছেন তিনি ? কিন্তু জিম হঠাৎ উপলব্ধি করলেন প্রশ্ন করলেও বেশিরভাগ মানুষ সেটার উত্তর ঠিকভাবে শোনেন না । ব্যাপারটা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলেন জিম বিশপ । প্রায় প্রতিদিনই প্রশ্ন করেন এরকম একজন মানুষকে বেছে নিলেন ।
একদিন সকালে সেই বিশেষ ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হল জিম বিশপের । বিশপকে দেখার পর প্রতিদিনের মতো একই প্রশ্ন করলেন ভদ্রলোক : ‘জিম , কেমন আছেন আপনি ?’
উত্তরে জিম বললেন , ‘আমার ফুসফুসে ক্যান্সার হয়েছে ।’
’গুড,’ কয়েক সেকেন্ড পর বললেন ভদ্রলোক । ‘শুনুন…’
তিনি যে ভুল কিছু উপলব্ধি করেননি সে ব্যাপারে হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে গেলেন জিম বিশপ ।
ডেল কার্নেগি তার বইতে এ ব্যাপারটা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন । বইটার নাম ‘হাউ টু ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স পিউপল ।’ ছাপ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বইটার ১৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে গেছে । ওটার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে : আগ্রহ জাগাতে চাইলে , নিজে আগ্রহী হন ।
বইয়ের এক জায়গায় তিনি লিখেছেন , ‘মানুষকে এমন প্রশ্ন করুন যেটার উত্তর দিতে সে আগ্রহবোধ করবে । অন্য মানুষকে তার নিজের সম্পর্কে কথা বলতে আগ্রহী করে তুলুন । প্রশ্ন করুন তার অর্জন সম্পর্কে । মনে রাখবেন যে কোনো মানুষ যতটা না আপনার সমস্যার কথা শুনতে আগ্রহী তারচেয়ে ঢের আগ্রহী তার নিজের সমস্যা আর চাহিদা নিয়ে কথা বলতে । দাঁত ব্যাথায় ভুগছে একজন মানুষকে বলুন চীনে দুর্ভিক্ষের কারণে এক মিলিয়ন মানুষ মারা গেছে । ব্যাপারটা খুব একটা আমলে নেবেন না তিনি । কারণ তখন নিজের দাঁতব্যথা ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো কিছু নিয়ে ভাবতে রাজি নন তিনি । নাকের ওপর বিষফোঁড়া নিয়ে আফ্রিকায় ঘটে যাওয়ার পর পর চোদ্দটা বিস্ফোরণ নিয়ে মাথা ঘামাতে চাইবে না কেউ । কোনো আলোচনা শুরু করার আগে এই ব্যাপারটা মনে রাখতে হবে আপনাকে । ’
অনেক তুখোড় উকিল আছেন , যারা শারীরিক ভাষার সফল অনুবাদ করে খুব সহজেই নিজেদের কাজ চালিয়ে নিতে পারেন । তবে আমেরিকার সফলতম উকিলদের একজন , অ্যাডওয়ার্ড বেনেট উইলিয়ামস বলেছেন তার মনে হয় ব্যাপারটার ওপর আসলে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় ।
তবে বিপরী চিত্রও আছে উইলিয়ামসের কলিগ , লুইস নাইযার কিন্তু মনে করেন প্রত্যেকটা শারীরিক ভঙ্গির আলাদা একটা অর্থ আছে । যেমন একটা পায়োর ওপর আকেটা পা রাখলে বুঝতে হবে আপনি মিথ্যে কথা বলছেন । একইভাবে কেউ যদি হাত ভাঁজ করে রাখেন তাহলে তিনি ধরে নেন ভদ্রলোক অস্বস্তির মধ্যে আছেন । এভাবে প্রত্যেকটা শারীরিক ভঙ্গির আলাদা আলাদা অর্থ জানা আছে লুইস নাইযারের ।
আমার কাছে শারীরিক ভঙ্গি আসলে কথা বলার মতো । যোগাযোগ এবং আলোচনার স্বাভাবিক একটা অংশ এটা ।
কথা বলার সময় নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চান আপনি এবং সেই সঙ্গে অন্যের মনোযোগও আশা করেন । এ ব্যাপারে বাজারে যত ভালো বই আছে তার সবগুলো পড়ে ফেলেছেন আপনি । কীভাবে কি করতে হতে তার আদ্যোপান্ত সবই জানা আছে । কিন্তু কথা বলার সময় এমনভাবে বসলেন যেটা আপনার স্বাভাবিক ভঙ্গ নয় । এই অবস্থায় বইয়ে পড়া কোনো কিছুই আর কাজে লাগাতে পারবেন না । নিজেই চরম অস্বস্তির মধ্যে পড়ে যাবেন । অন্যের কাছে মনে হবে এই মুহূর্তে যা করছেন সেটার ওপর আপনার পূর্ণ মনোযোগ নেই । যদিও কথাটা আসলে সত্যি নয় । কিন্তু ভুল ভঙ্গির কারণে আপনার সামনে বসা মানুষ ঠিক এরকমই ভাববে । কথা বলার সময় আপনি যে ভঙ্গিতে বসেন বা দাঁড়িয়ে থাকেন সেটা নিজেই আসলে কথা বলার মতো । কথা বলার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার বসার বা দাঁড়াবার ভঙ্গি বদলে যাবে । এই দুটোর মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এটা ঠিক রাখার খুব সহজ একটা উপায় আছে । সেটা হচ্ছে সব সময় স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন , কথা বলুন একেবারে মন খুলে ।
শারীরিক ভঙ্গি বা ভাষার ব্যাপারে এখনো অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে আমাকে । কাজেই এ ব্যাপারে নিজেকে এখনো আমি বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করতে পারি না । তবে যে কোনো আলোচনায় সফল হতে শারীরিক ভঙ্গির একটা নিয়ম অবশ্যই আপনাকে মেনে চলতে হবে । সেটা হচ্ছে চোখের যোগাযোগ ।
শুধুমাত্র মন্তব্য করার শুরু বা শেষে নয় , চোখের যোগাযোগ ঠিক রাখতে পারলে যার সাথে বা যেখানেই কথা বলুন না কেন আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা শতকার একশ’ভাগ । কারো কথা শোনার ক্ষেত্রেও কিন্তু এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে । কথা বলার সময় একেক মানুষ একেক রকম ভঙ্গিতে থাকেন । শো’তে কারো সঙ্গে কথা বলার সময় একটু সামনে এগিয়ে যাই । এতে আমার সামনে বসা ভদ্রলোকটি বুঝতে পারেন যে তার কথা শোনার ব্যাপারে আমি আগ্রহী ।
আগেই বলেছি ভালোভাবে কথা বলার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ভালো শ্রোতা হওয়া । আপনি যদি সত্যি মনোযোগ দিয়ে কারো কথা শুনতে চান , তাহলে তার মুখের দিকে খুব সহজেই তাকিয়ে থাকতে পারবেন । খুব কাছ থেকে কারে সঙ্গে কথা বললে বা শুনলে আপনার শারীরিক ভাব-ভঙ্গি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে শুরু করবে । হয়ত দেখবেন কথা শুনতে শুনতে মাথা নাড়ছেন আপনি । এতে পরিষ্কার হয়ে যাবে সামনে বসা ভদ্রলোক বা তার কথার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ আছে আপনার । তবে একটা কথা কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না । পুরো ব্যাপারটা অনুভূতির ওপর ছেড়ে দিতে হবে আপনাকে । বইতে পড়েছেন মাথা নাড়তে হবে । শুধু এই কারণে শারীরিক ভাব-ভঙ্গি ঠিক করতে যাবেন না । নিজের মনের মতো করে কথা বলুন আর শুনুন – শারীরিক ভাবভঙ্গি সেটার সঙ্গে তাল মেলাতে বাধ্য ।
চোখের যোগাযোগ ব্যাপারে আরেকটা কথা মনে রাখতে হবে আপনাদের । কথা বলার শ্রোতার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকাটা যুদও খুব গুরুত্বপূর্ণ , কিন্তু তাই বলে সারাক্ষণ শ্রোতার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে এরকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই । এমন অনেক মানুষ আছেন , যারা শ্রোতার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে অস্বস্তিবোধ করেন । আপনারও এরকম হতে পারে । এটা অস্বাভাবিক কিছু না । কারো কথা শোনার সময় এবং কাউকে কোনো প্রশ্ন করার সময় চোখের যোগাযোগ ঠিক রাখার চেষ্টা করুন । কোনো একটা বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় মাঝে মধ্যে শ্রোতার মুখ থেকে চোখ সরিয়ে নিতে পারেন আপনি । তবে পার্টিতে কারো কথা শোনার সময় হঠাৎ করে তার কাঁধের ওপর দিয়ে অন্য কারো দিকে তাকাবেন না । এত মনে হবে কথা বলার জন্য তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাউকে খুঁজছেন আপনি ।
সবশেষে শারীরিক ভাবভঙ্গির ব্যাপারে শেষ একটা উপদেশ দিতে চাই আমি । চোখের যোগাযোগ থেকে শুরু করে সব রকম ভাবভঙ্গির কথা ভুলে যান । শুধু খেয়াল রাখুন আপনার বলা কথা শ্রুতিমধুর হচ্ছে কিনা । শারীরিক ভাবভঙ্গি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে অনুসরণ করবে ।

সংগৃতীত:-

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]