Get on Google Play

লিখিত পরীক্ষা বিষয়ক
#1587
প্রশ্ন : ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’পত্রিকা সম্পর্কে ধারণা দিন।
উত্তর : গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা উনিশ শতকের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসিক পত্রিকা। কাঙাল হরিনাথ (হরিনাথ মজুমদার) ১৮৬৩ সালের এপ্রিল মাসে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে পত্রিকাটি প্রকাশ করতেন। কালক্রমে পত্রিকাটি পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়। প্রথমদিকে পত্রিকাটি মুদ্রিত হতো কলকাতার গিরিশচন্দ্র বিদ্যারতেœর ‘বিদ্যারত্ন প্রেস’ থেকে; পরে ১৮৬৪ সালে কুমারখালিতে মথুরানাথ প্রেস স্থাপিত হলে সেখান থেকে মুদ্রিত হতে থাকে। এ ছাপাখানাটি ১৮৭৩ সালে ইতিহাসবিদ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র পিতা মথুরানাথ মৈত্রেয় হরিনাথকে দান করেন।

গ্রাম এবং গ্রামবাসীদের অবস্থা প্রকাশের জন্য এর নাম হয় গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা। তবে মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের ওপর নীলকর সাহেব ও জমিদারদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করা। সমসাময়িক কালের সামাজিক ও রাজনৈতিক অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ জানিয়ে লেখা নিবন্ধ ও সংবাদ প্রকাশিত হতো। এছাড়াও সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞানবিষয়ক প্রবন্ধ প্রকাশিত হতো। লালন ফকিরের গানও প্রকাশ করেছিল গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা। রাজশাহীর রাণী স্বর্ণকুমারী দেবীর আর্থিক সহায়তায় পত্রিকাটি দীর্ঘ ১৮ বছর প্রকাশিত হওয়ার পর আর্থিক অনটন, হরিনাথের ধর্মসাধনায় মনোনিবেশ ও সরকারের মুদ্রণ শাসন ব্যবস্থার কারণে বন্ধ হয়ে যায়।

প্রশ্ন : ‘সবুজপত্র’ পত্রিকা সম্পর্কে ধারণা দিন।
উত্তর : বাংলা ভাষায় অন্যতম প্রধান সাময়িক পত্রিকা ছিলো সবুজপত্র। প্রমথ চৌধুরীর সম্পাদনায় পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৪ সালের ৭মে (২৫শে বৈশাখ, ১৩২১ বঙ্গাব্দ)। এতে শুধু সবুজ রং-ই ব্যবহার করা হতো। নন্দলাল বসু অঙ্কিত একটি সবুজ তালপাতা এর প্রচ্ছদে ব্যবহৃত হতো। সবুজপত্রে কখনও কোনো বিজ্ঞাপন এবং ছবি প্রকাশিত হয়নি। তিনি শুধু সাহিত্য রচনায় মন দিয়েছেন। তিনি নিজেই বলেছেন- ‘কলম চালানো আমার সখ, কাগজ চালানো আমার ব্যবসা নয়।’ তাই সবুজপত্র সাধারণ পাঠক ও লেখকদের কাছে জনপ্রিয় হতে পারেনি। প্রথম পর্যায়ে পত্রিকাটি ১৯২২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে চালু হয়ে ১৯২৭ সালে বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতাস্থ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারে সবুজপত্রের সকল সংখ্যা সংরক্ষিত আছে।

কথ্য বা মৌখিক ভাষাকে লেখার মাধ্যম করতে ‘সবুজপত্র’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবুজপত্রে প্রকাশিত সকল লেখায় মুক্তচিন্তা, গণতন্ত্র, যুক্তি এবং ব্যক্তি স্বাধীনতা প্রকাশ পেয়েছে। ‘সবুজপত্র’ প্রকাশের শুরু থেকেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সক্রিয় অংশ গ্রহণ ছিল। ‘সবুজপত্র’কে ঘিরে একটি গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। এদের মধ্যে ছিলেন- ইন্দিরা দেবী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, অতুলচন্দ্র গুপ্ত, ব্রজেন্দ্রনাথ শীল, ধূর্জটিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, সতীশ চন্দ্র ঘটক, হৃষিকেশ সেন, সুরেশ চন্দ্র চক্রবর্ত্তী, কিরণশঙ্কর রায়, সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য প্রমুখ।

প্রশ্ন : ‘শিখা’ পত্রিকার পরিচয় দিন।
উত্তর : মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র শিখা পত্রিকা। এটি বার্ষিক পত্রিকা। মুসলিম সাহিত্য সমাজের সারা বছরের কর্মকান্ডের পরিচয় বহন করত শিখা। এর সর্বমোট পাঁচটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়। প্রথম সংখ্যার (১৯২৭) সম্পাদক আবুল হোসেন, দ্বিতীয় (১৯২৮) ও তৃতীয় সংখ্যার (১৯২৯) সম্পাদক কাজী মোতাহার হোসেন, চতুর্থ সংখ্যার (১৯৩০) সম্পাদক আবদুর রশিদ এবং পঞ্চম সংখ্যার (১৯৩১) আবুল ফজল। এ পত্রিকার শিরোদেশে লেখা থাকত- ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। এ উক্তিকেই শিখা লেখকগোষ্ঠীর আদর্শবাণী হিসেবে বিবেচনা করা হতো। পত্রিকার মূল সম্পাদনার কাজে থাকতেন আবুল হুসেন। তিনি পত্রিকাটি চালানোর অর্থও যোগান দিতেন।

শিখা’ পত্রিকার লেখাগুলো মূলত তৎকালীন সমাজের কথা বলেছে। মুসলমানদের জাগরণের কথা বলেছে। সামাজিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তায় গুরুত্বারোপ করেছে। প্রতিটি সংখ্যায় বিখ্যাত ব্যক্তিকে নিয়ে লেখা থাকতো। ইতিহাসের কিছু চমৎকার অধ্যায় থাকতো। সমাজের কিছু কুসংস্কারের বিষয়ে সজাগ করে দেয়া হতো। নারীদের নিয়েও তাদের ইতিবাচক মনোভাব ছিলো। তৎকালীন সমাজের মুক্তচিন্তার ধারকদের কাছে পত্রিকাটি ছিলো মত প্রকাশের জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম। সেখানে ঘুণে ধরা সমাজকে সংস্কারের ব্যাপারে আলোকপাত করা হতো। প্রথম সংখ্যার শুরুতেই ছিলো কবি নজরুলের ‘খোশ আমদেদ’ শিরোনামের একটি শুভেচ্ছা নিবন্ধ।

সংগৃহিতঃ-
    Similar Topics
    TopicsStatisticsLast post
    0 Replies 
    930 Views
    by mousumi
    1 Replies 
    838 Views
    by tasnima
    0 Replies 
    25 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    25 Views
    by bdchakriDesk
    0 Replies 
    16112 Views
    by tasnima

    বিষয় : রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, আপন বিভাগের “[…]

    বিষয় : স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্[…]

    Amendment of Vacancy announcement for the post of […]